Wednesday, April 20, 2016

একটি গোয়েন্দা গল্পঃ prevention of isoimmunisation in Rh(-ve) mother| StudyinGynae



ধরি, কোন দেশে একদল চোর ঘুরে বেড়াচ্ছে।চোর না, আরো মারাত্মক কিছু—ডাকাত বা হাইজ্যাকার। এরা mass population এ মিশে আছে। তাদের চুপিসারে ধরে ফেলা খুব জরুরী। নয়ত পুলিশ –র‍্যাব- সেনাবাহিনীতে খবর চলে গেলে সর্বনাশ! পুরো দেশেই তখন হৈ-হট্টগোল শুরু হবে।তাই বাইরে থেকে ছদ্মবেশে কয়েকটা স্পেশাল পুলিশ পাঠানো হল। এরা চুপিসারে একটা একটা করে অপরাধী ধরবে আর তাদের আগ্নেয়াস্ত্র কব্জা করে আলাদা আলাদা ভাবে থানায় নিয়ে যাবে!

আমার সামনে আমার রিডিং পার্টনার চোখ বড় বড় করে শুনছে। না, আমরা কোন গোয়েন্দা কাহিনী নিয়ে কথা বলছিনা। আমরা কথা বলছি Rh (-)ve মা কে নিয়ে।

এই বিশাল গোয়েন্দা গল্পের সূচনা হয়েছিল একটা প্রশ্ন নিয়ে।– - -

‘আচ্ছা? – Rh(-)ve মায়ের যদি (+)ve বাচ্চা হয় তাহলে কি হবে?
-প্রথম বাচ্চার কোন সমস্যা হবেনা। ২য় (+)ve বাচ্চা টিকবেনা।

কেন টিকবেনা?
--প্রথম বার মায়ের সিস্টেম যেই খবর পাবে, বাচ্চাটা পিজিটিভ ছিল, সে সাবধান  হয়ে যাবে (sensitized) সে টহল পুলিশ বানাবে (Ig M).

২য় পজিটিভ বাচ্চার বেলায় যেই হেড কোয়ার্টারে খবর যাবে (পজিটিভ মানে এন্টিজেন সহ লোহিত কণা), অমনি র‍্যাব সেনাবাহিনী তাকে বধ করতে ততপর হয়ে যাবে (IgG)
(২য় পজিটিভ) বাচ্চার জন্মের প্রথম ৭২ ঘন্টার মধ্যে মাকে যদি টিকা দেয়া যায়, তাহলে (ভবিষ্যতের) ৩য় বাচ্চাটা সেফ থাকবে।

কি টীকা?
IgG.

মানে?
তখনই আমি এই লোমহর্ষক গোয়েন্দা গল্পটি বল্লাম যে,--
 দেশে (মায়ের রক্তে) অপরাধী (পজিটিভ রেড সেল) আগ্নেয়াস্ত্র (এন্টিজেন)নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাকে চুপিসারে গ্রেপ্তার করতে স্পেশাল পুলিশ (বাইরের IgG) পাঠানো হল। সে একটা একটা করে অপরাধী বিনাশ করল। মায়ের সিস্টেম জানতেও পারলনা। পরের বাচ্চার জন্য টহল পুলিশও আসল না।

এখন একজন রুগীর ইতিহাস বলি, যেটা আমাদের লেকচার ক্লাসে স্যার বলেছিলেন। 
এক মায়ের সাতটি সুস্থ সন্তান আছে।একটি রোগের কারণে যখন তার অপারেশন দরকার পড়ল, পরীক্ষা করে দেখা গেল, তিনি একজন নেগেটিভ মা।তার স্বামী পজিটিভ। 

ইতিহাসটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ, আমরা জানি পৃথিবীতে পজিটিভ মানুষই বেশী। তাদের জেনেটিক গঠন হয় (DD) বা (Dd)
মা নেগেটিভ মানে তার configuration (dd)
এখন, বাবা যদি (DD) হন, তখন এই জুটির সবগুলি সন্তানই হবে পজিটিভ (Dd, Dd)
আর বাবা যদি Dd হন, তাহলে এই জুটির অর্ধেক সংখ্যক সন্তান হবে পজিটিভ (Dd)
আর অর্ধেক হবে নেগেটিভ (dd)

তাহলে তার সাতটি সুস্থ সন্তান থাকার পিছনে রহস্যটা কি?

১। ৩০% পর্যন্ত নেগেটিভ মায়েরা immunological nonresponder হয়।যত খুশি পজিটিভ এন্টিজেন ঢুকুক,হের সিস্টেম কিছুই বলবেনা।এইটা তার জন্মগত অভ্যাস।

২। দুজনের (মা-বাচ্চা) রক্ত খুব বেশি পরিমাণ মিশ্রিত হয়নি (কমপক্ষে এক মিলি লিটারের দশ ভাগের এক ভাগ পরিমাণ মিশতে হবে)

৩।নির্দিষ্ট জিনের ক্ষেত্রে দুর্বল প্রতিক্রিয়া। যেমন, বাচ্চা পজিটিভ, ঠিক আছে, কিন্তু তার জিন হল CDe/cde. একে নেগেটিভ মায়ের সিস্টেম কিছু বলবেনা।

৪। ABO গ্রুপও যদি না মিলে।
আমরা জানি,ABO group মানে এখানে এন্টিজেন এন্টিবডি সবই আছে, যেমন-
A-     কোষে Antigen হল A, আর তরলে এন্টিবডি আছে B এর বিরুদ্ধে

আর Rh গ্রুপে খালি এন্টিজেন আছে। D এন্টিজেন থাকলে সে পজিটিভ। আর dd জিন ওলা মানুষগুলির এন্টিজেনও নাই। দু দনের কারোরই এন্টিবডি নাই। দরকার পড়লে সিশটেম বসে বসে এন্টিবডি বানায়। 

ধরি মা O-ve, বাচ্চা A, B বা AB +ve,
তখন এই +ve এর এন্টিজেন এর বিরুদ্ধে একশন নেয়ার আগেই O (মানে তার এন্টি A,এন্টিB দুইটা অস্ত্রই আছে)O, A,B, AB মারামারি করেই সব শেষ। 
-ve /+ve যুদ্ধের জন যথেষ্ট +ve RBC ই নাই। মাঝখান দিয়ে ভবিষ্যত পজিটিভ বাচ্চাটা বেঁচে গেল।

এমনই কিছু হয়ে থকবে ওই মায়ের বেলায়। 

[theory: D.C Dutta: Textbook of Obstetrics]



No comments:

Post a Comment